রাজকাঁকড়া নিয়ে গবেষণা চালাতে সৈকতে হ্যাচারি

কক্সবাজার প্রতিনিধি

মূল্যবান ঔষধিগুণ সমৃদ্ধ সামুদ্রিক প্রাণী রাজকাঁকড়া নিয়ে গবেষণা চালাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে প্রাকৃতিক হ্যাচারি তৈরি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সৈকতের রেজুখালের মোহনায় বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট (বোরি) বাঁশের বেড়া দিয়ে ৪০ শতক জমিতে হ্যাচারিটি গড়ে তোলে। এতে প্রাথমিকভাবে ১১৯টি রাজকাঁকড়া অবমুক্ত করা হয়েছে।

বোরির বিজ্ঞানীরা ২০২১ সালের আগস্ট থেকে গবেষণা চালাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, রাজকাঁকড়ার রক্ত উন্নত বিশ্বের দেশগুলো ব্যবহার করে মূল্যবান ওষুধ তৈরি করছে।

বোরির চলমান গবেষণা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক তৌহিদা রশীদ। তিনি বলেন, ‘রাজকাঁকড়া সুনীল অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে। এ লক্ষ্যে গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে বোরিসংলগ্ন সৈকতেই হ্যাচারি করা হয়েছে।’

এই গবেষণা কার্যক্রমে কারিগরি তত্ত্বাবধানে রয়েছেন ভারতের কেএন কলেজ অব বেসিক সায়েন্সের সাবেক অধ্যক্ষ জৈব সমুদ্র বিজ্ঞানী ও রাজকাঁকড়া বিশেষজ্ঞ গোবিন্দ চন্দ্র বিসওয়াল। তিনি এক সপ্তাহ ধরে মহেশখালীর গোরকঘাটা, আদিনাথ ও সোনাদিয়া দ্বীপ, রামুর পেঁচারদ্বীপ, সোনারপাড়া এবং কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ও নাজিরারটেক এলাকা পরিদর্শন করে রাজকাঁকড়ার প্রজননস্থান চিহ্নিত করেন।

এ নিয়ে কথা হলে গোবিন্দ চন্দ্র আজকের পত্রিকাকে জানান, রাজকাঁকড়ার রক্ত থেকে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ অত্যন্ত দামি ওষুধ উৎপাদন করছে। এ ছাড়া মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে এটি স্যুপ হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

বোরির জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘এগুলো কাদাযুক্ত সৈকতেই বেশি পাওয়া যায়। এই হ্যাচারিও সে উপযোগী জায়গায় করা হয়েছে। সেখানে সমুদ্র উপকূল থেকে সংগ্রহ করা ৭১টি পুরুষ ও ৪৮টি স্ত্রী রাজকাঁকড়া অবমুক্ত করা হয়েছে।’

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের রেজুখালের মোহনায় গতকাল বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে রাজকাঁকড়ার হ্যাচারি স্থাপন করা হয়। এখানে মূল্যবান ঔষধিগুণ সমৃদ্ধ রাজকাঁকড়া নিয়ে গবেষণা করা হবে। ছবি: আজকের পত্রিকা