Image View
Text View
Font Size
দুর্নীতি রোধে এনবিআরে আবাসিক পরামর্শক বসাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন প্রস্তাব
ফারুক মেহেদী, ঢাকা
রাজনীতি ও কূটনীতিতে প্রভাব বিস্তারের পর এবার বাংলাদেশের স্পর্শকাতর খাত কর বিভাগে চোখ পড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেজারি বাংলাদেশের কর ফাঁকি, কর আদায় এবং এ খাতের দুর্নীতি ধরিয়ে দিতে এ দেশের কর বিভাগের সঙ্গে সমান্তরালে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছে।
প্রস্তাবে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে এনবিআরে আবাসিক পরামর্শক বসানোর কথা বলা হয়েছে। তিনিই এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক হিসেবে এখানে আরও পরামর্শক নিয়ে গঠিত টিমের নেতৃত্ব দেবেন। আর তাঁরা রিপোর্ট দেবেন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টকে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে মেয়াদ হতে পারে তিন থেকে পাঁচ বছর।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের পাঠানো প্রস্তাবটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সিনিয়র সচিব হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়, রাজস্ব প্রশাসনের সংস্কারই যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য। এর পাশাপাশি তাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের কর আদায় বাড়ানো, ফাঁকি ধরা এবং এ খাতে স্বচ্ছতা ফেরানোতে সহায়তা করা। দেশটি চায় দ্রুত এনবিআর এ ব্যাপারে মতামত জানাবে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী
এরপর পৃষ্ঠা ৯ কলাম ১
মন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সর্বশেষ ঢাকা সফরকালে দেশটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কর খাতে সহায়তা করার প্রস্তাবটি প্রথম দেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিল যুক্তরাষ্ট্র।
নিজস্ব প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকা পরও একটি দেশের রাজস্ব বা কর খাতের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় ভিন্ন দেশের পরামর্শক বসানো দেশের স্বার্থে কতটা নিরাপদ? এমন প্রশ্নে এনবিআরের সাবেক সদস্য ও শুল্ক বিশেষজ্ঞ আবদুল মান্নান পাটোয়ারি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজস্ব খাতে অনেক বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। কাস্টমস আন্তর্জাতিক সফটওয়্যারে চলে। সেখানে বৈশ্বিক উত্তম চর্চাগুলো হয়। তবে তাদের প্রস্তাব পেলেই এনবিআর রাজি হয়ে যাবে—এমনটি মনে হয় না। তারা আগে পর্যালোচনা করবে। কোনটা দেশের স্বার্থে, তা দেখবে। কোনটা হস্তক্ষেপ আর কোনটা নীতির সঙ্গে যায় না, এগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে তবেই তারা সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে হয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে বলা হয়, দেশটির ট্রেজারি বিভাগ এখানে কর ও শুল্ক খাতের দক্ষ পরামর্শকদের বসাবে, যারা উভয় খাতের প্রশাসনিক ব্যবস্থা, হিসাব-নিকাশ, ফাঁকি ধরার কৌশল, সাধারণ নিরীক্ষা ও বিশেষায়িত নিরীক্ষা পরিচালনায় সহায়তা করবে ও নীতিসহায়তা তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে করদাতারা যাতে নিজে নিজে কর দিতে উদ্বুদ্ধ হয়, সে রকম শিক্ষা ও প্রশিক্ষণসহ আরও বহু রকমের পরামর্শ ও উপদেশ দেবে। শুল্ক খাতেও তারা প্রায় একই রকম সহায়তা দিতে চায়।
কর ফাঁকি ও দুর্নীতি ধরতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চায় দেশটি।
এ জন্য একটি প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ।